শিক্ষা প্রসারে অনন্য অবদান

পরিচিতি:- দেশ বরেন্য, প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন (ছারছীনা দরবার শরীফ)মরহুম হযরত মাও. মোঃ আব্দুল হাকিম (রহঃ) ৩১ই ডিসেম্বর ১৯৩৪ সালে তৎকালিন কুমিল্লা বর্তমানে চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ থানাধীন শ্রীনারায়নপুর (প্রকাশ্য) বলাখাল গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন।তাঁর পিতা মরহুম হাছান আলী মুন্সী অত্র এলাকার এক জন বিশিষ্ট্য ধর্ম গুরু হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ওনার পিতামহ মরহুম আলহাজ্ব লস্কর আলী ও ভাই আলহাজ্ব আস্কর আলী একত্রে পবিত্র মক্কা শরিফে হজ করতে গিয়ে আস্কর আলী সেখানে থেকে যান এবং ইন্তেকাল আলহাজ্ব লস্কর আলী দেশে পিরে আসেন। তাঁর ওরসে ই এ বংশধর।

শিক্ষা জীবন

২ বৎসর বয়সে ই তিনি পিতৃহারা হয়ে মায়ের একক প্রচেষ্টায় নিজ এলাকায় শিক্ষা জীবন শুরু করে সর্বশেষ তৎকালিন এক মাত্র সরকারী আলীয়া মাদ্রাসা ঢাকা থেকে ১৯৫১ সালে টাইটেল পরীক্ষায় সফলতার সহিত উত্তীর্ণ হন।কর্মজীবন তিনি দুটি ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা ও একটি আলিম মাদ্রাসার রুপকার।

১৯৫১ইং সালে তিনি কর্মজীবন শুরু করে প্রথমত হাজীগঞ্জ থানাধীন বাকিলা ফাজিল মাদ্রাসায় যোগ দান করেন। এখানে উল্লেখ্য বর্নিত মাদ্রাসাটি ১৯০৫ইং সালে স্থাপিত হলেও সরকারী তথা মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের স্বীকৃতি লাভ করতে পারে নি। এ মহৎ ব্যক্তির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবং আল্লাহপাকের অশেষ মেহের বানীতে ১৯৫৫ইং সালে মাদ্রাসাটি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধিনে দাখিল ও আলিম একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে এবং ১৯৭০ইং সালে ফাজিল (ডিগ্রি) ক্লাসের ও স্বীকৃতি পায়। বর্তমানে এ মাদ্রাসায় শিক্ষক ২০ (বিশ) এবং কর্মচারী চার জন।এখানে তিনি দীর্ঘ ২০ বৎসর কাল কর্মজীবন শেষে সাতবাড়িয়া, বেতিয়াপাড়া ও সিদলা এলাকাবাসী ধর্মপ্রান মোসলমানগণের এবং ছারছীনা শরিফের মরহুম হযরত পীর ছাহেব আলহাজ্ব আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ (রহ.) এর এযাজতে হাজীগঞ্জ থানাধীন সাতবাড়িয়া গ্রামে সালেহআবাদ এম.এন ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা স্থাপন করেন। উল্লেখ্য মাদ্রাসাটি ১৯৬৫ইং সালে মক্তব আকারে শুরু হয়ে ০১/০৬/১৯৭০ইং সালে সরকারি মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে তাঁর ই ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এবং আল্লাহপাকের রহমতে দাখিল ও আলিম মঞ্জুরী লাভ করে এবং সালে ফাজিল (ডিগ্রি) ক্লাসের ও স্বীকৃতি পায়। বর্তমানে এ মাদ্রাসায় শিক্ষক ২৭ জন এবং কর্মচারী ৫ জন। এ মাদ্রাসায় তিনি ১৩ বৎসর কর্মজীবন শেষে নিজ এলাকায় বলাখালের ধর্মপ্রান মোসলমানগনের অনুরোধে এবং শরিফের পীর সাহেব আলহাজ্ব হযরত মাওলানা আবু জাফর মো: ছালেহ (রহ.) এর এখাজতে হাজীগঞ্জ থানাধীন বলাখাল গ্রামে বলাখাল নূর-ই মদিনা নেছারিয়া আলিম মাদ্রাসা স্থাপন করেন।এ মাদ্রাসাটি ১৯৭৩ইং সালে মোক্তব আকারে শুরু হয়ে ১৯৮৫ইং সালে দাখিল এবং ১৯৯৩ইং সালে আলিম (ইন্টারমিডিয়েট) মাদ্রাসা হিসেবে একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে।এ মাদ্রাসায় তিনি দীর্ঘ ১০ বৎসর কাল কর্মজীবন শেষে বিগত ৩১/১২/১৯৯৪ইং সালে দীর্ঘ ৪৩ বৎসর অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মজীবন শেষে অবসর গ্রহণ করে ০৬/০২/২০০৬ইং সালে এ মহৎ ব্যক্তি ইন্তেকাল করেন। ইন্নালিল্লাহি......মৃত্যু কালে তিনি স্ত্রী, ৫ ছেলে ও ৪ মেয়ে রেখে যান। সবাই শিক্ষিত ও বিবাহিত। ইতি মধ্যে তাঁর স্ত্রী গত ২৮/০৫/২০১৯ইং ২২ শে রমজান ইন্তেকাল করেন। ইন্নালিল্লাহি................তাঁর বড় ছেলে আলহাজ্ব মাওলানা মোহাম্মদ মাহবুবুল হাছান, তিনি ডবল কামিল ও এম.এ।বর্তমানে মরহুমের প্রতিষ্ঠিত সর্বশেষ প্রতিষ্ঠান বলাখাল নূর-ই মদিনা নেছারিয়া আলিম মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ পদে কর্মরত। তিনি রাষ্ট্রীয় ভাবে পর পর তিন বার প্রধানমন্ত্রী পুরষ্কার প্রাপ্ত।

এ মাদ্রাসাটি বর্তমানে এ রুপ নিয়েছে।মাদ্রাসার দুটি ক্যাম্পাস। পুরাতন ক্যাম্পাসে ৫তলা ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট ৩য় তলা একটি ভবন। এখানে নূরানী, হাফেজি, লিল্লাহ বডিং ও এতিমখানার কার্যক্রম চলছে। ১৫০ জন ছাত্র বর্তমানে আবাসিকে থেকে লেখা পড়া করছে।নতুন ক্যাম্পাসে ২টি ভবন। ১৫৬৯৩০ ফুট তিন তলার ফাউন্ডেশন কৃত ২ তলা ভবন একটি। ৬০দ্ধ৩০ ফুট ২তলার ফাউন্ডেশনকৃত ১তলা ভবন একটি।বর্তমানে সরকারি ভাবে বরাদ্দকৃত ৮৫,০০,০০০ (পঁচাশি লক্ষ) টাকার মাধ্যমে ৪ তলা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর গত ১৬/১১/২০১৯ইং তারিখ মাননীয় এম.পি মহোদয় হাজীগঞ্জ ও শাহ্রাস্তি নির্বাচনী এলাকার মেজর অবসর প্রাপ্ত রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম স্থাপন করেছেন।প্রতিষ্ঠানটি অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে অবস্থিত। এখানে বর্তমানে ১৮ জন শিক্ষক ও তিন জন কর্মচারী কর্মরত। আল্লাহ পাক তাঁর এ খেদমতকে কবুল করুন এবং এ মহৎ কর্মের প্রতিদান হিসেবে তাঁকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসিব করুন। আমিন।